হাবিবুর রহমান, নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ খাদ্য গোদাম থেকে প্রায় ৭ হাজার চালের বস্তা উধাও হয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় খাদ্য গোদাম সিলগালা করা হয় ও ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
পরে অন্য জায়গা থেকে গভীর রাতে পিকআপভ্যানে করে সমপরিমাণ খালি বস্তা আনতে গেলে এলাকাবাসী পিকআপটি আটক করে এর চালক ও হেলপারকে থানায় সোপর্দ করে। তবে এ বস্তা খাদ্য গোদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মোতাকাব্বির খান প্রভাস শম্ভুগঞ্জ থেকে কিনে এনেছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাকের চালক ও হেলপার।
রোববার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের নওহাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বস্তাসহ পিকআপটি আটক করে এলাকাবাসী।
থানায় আটক ট্রাকের
চালক শম্ভুগঞ্জ এলাকার রাইফুল ও হেলপার আরিফ জানায়, আমাদেরকে এসব বস্তা মোহনগঞ্জ পৌছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বস্তা গ্রহণকারীর একটি নাম্বার তারা দেখান। যাচাই করে দেখা গেছে এই নাম্বারটি গোদামের ওসিএলএসডি মোতাকাব্বির খান প্রভাসের।
এরআগে রোববার বিকেলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মোহনগঞ্জ খাদ্য গোদাম পরিদর্শন করেন। পরে পরিমাণের চেয়ে প্রায় ৭ হাজার চালের বস্তা কম দেখতে পেয়ে ৩ নম্বর গোদামটি সিলগালা করেন। পাশাপাশি এ ঘটনা তদন্তে বারহাট্টা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দিলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এতে পূর্বধলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আনিছুর রহমান খান ও আটপাড়ার খাদ্য পরিদর্শককে সদস্য করা হয়।
মোহনগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রতি ১৫দিন পরপর আমরা গোদাম পরিদর্শন করে রিপোর্ট করি। এটা নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ। এতে ৩ নম্বর গোদামে প্রায় ৬-৭ হাজার বস্তা কম দেখা যায়। বিষয়টি জেলা কর্মকর্তা জেনে রোববার বিকেলে তদন্তে এসে কিছুটা সত্যতা পান। ফলে তিনি ওই গোদামটি সিলাগালা করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
অভিযুক্ত ওসিএলএসডি মোতাকাব্বির খান প্রভাস তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গোদামের সব বস্তা গোনা সম্ভব হয়নি বলে তদন্ত কমিটির কাছে বস্তা বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। রাতে আটক হওয়া বস্তা ভর্তি পিকআপটি আমার নয়। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই আটক পিকআপে খালি বস্তা ছিল। সেগুলো স্থানীয় একজন মিল মালিকের কাছে পৌছে দেয়ার কাগজপত্র দেখিয়েছে। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পিকআপে ওই অন্য কিছু পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বারহাট্টা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা দিলোয়ার হোসেন বলেন, তদন্তের কাজ এখনো শুরু করিনি। তবে শিগগির এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করবো।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে দ্রত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছি।
এ বিষয়ে জানতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভি করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোন সাড়া দেননি।



0 coment rios: